বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের ব্যয় কমানোর জন্য আয়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ব্যায়ের লাগাম টেনে ধরা দরকার।বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি সহ অনেক জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়ায়, আয়ের তুলনায় ব্যয় অনেকাংশে বেড়ে গিয়েছে। আমাদের দৈনন্দিন খরচের আয় ও ব্যয়ের ভারসাম্য না থাকলে অভাব লেগেই থাকবে। অনেক সময় দেখা যায় আমাদের মাস শেষে ঋণ করে চলতে হয়! সেই ঋণের বোঝা পরবর্তী মাসে গিয়ে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে।
আমরা যদি একটু চেষ্টা করি আমাদের অতিরিক্ত ব্যয় কমিয়ে আনতে পারি, এবং ভবিষ্যতের জন্য কিছুটা সঞ্চয় ও করতে পারি। আজকে আমরা বর্তমান পরিস্থিতিতে অপ্রয়োজনীয় এবং অতিরিক্ত ব্যয় কমিয়ে ভবিষ্যতের জন্য কিছুটা সঞ্চয় কিভাবে করব তার ওপরে কিছু টিপস নিয়ে আলোচনা করব। আসুন টিপস গুলো জেনে নেওয়া যাক।
ব্যয় কমানোর ৭ টি সহজ কৌশল।
১ – নিত্যপ্রয়োজনীয় দামি জিনিসের যত্ন নিন।
আমরা বর্তমানে অনেক নামী দামী জিনিস ব্যবহার করে থাকি। যেমন, স্মার্ট টেলিভিশন, লেপটপ, স্মার্টফোন, দামি মিউজিক সিস্টেম, হেডফোন,রেফ্রিজারেটর সহ ইত্যাদি। এসব জিনিস কোন ক্ষতি হলে বা সমস্যা হলে তার মেরামত করতে অনেক ব্যয়বহুল খরচ হয়। এসকল জিনিস যাতে ক্ষতি না হয় সেজন্য যত্নসহকারে ব্যবহার করুন, তাছাড়াও ভালো অবস্থায় ব্যবহার করে ভালো রাখতে পারলে ভবিষ্যতে ভালো দামে বিক্রি করা যায়।আমরা আমাদের দামি ডিভাইসগুলো একটু যত্নসহকারে ব্যবহার করলে কোন ক্ষতি ছাড়া দীর্ঘদিন ব্যবহার করতে পারব। এবং একটা ডিভাইস এভাবে দীর্ঘদিন ব্যবহার করতে পারলে এখান থেকে কিছুটা ব্যয় কমানো সম্ভব।
২ – শপিং এর তালিকা তৈরি করুন।
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে শপিং এর মাধ্যমে প্রচুর টাকা ব্যয় হয়। একটু কৌশলী হলে শপিং এর অতিরিক্ত ব্যয় কমিয়ে আনা সম্ভব।শপিংয়ে যাওয়ার পূর্বে কি কি কেনা দরকার তার একটি তালিকা তৈরি করুন।তারপর ওই তালিকাটি ভালোভাবে খতিয়ে দেখুন ও ভাবুন সবকিছুই কি আপনার প্রয়োজন কিনা? শপিং এর তালিকা তৈরি করেই কেনাকাটা শুরু করবেন না। তালিকাটা রেখে দিন এবং কিছুদিন অপেক্ষা করুন, দেখবেন এই তালিকা থেকে অনেক কিছু কেনার ইচ্ছা চলে যাবে। তালিকা তখন কাটছাট করুন। যে জিনিসগুলো আপনার সত্যিই প্রয়োজন সেটাই শুধু ক্রয় করুন।
৩ – অফার দেখে শপিং করুন।
বর্তমানে বছরের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দোকানে অনেক ডিসকাউন্ট এ পণ্য বিক্রয়ের অফার থাকে।ডিসকাউন্ট এর পণ্য মানে যে এর গুনগত ম্যান খারাপ আসলে এমনটি নয়।এসকল ডিসকাউন্টে পণ্য কিনে অনেক অতিরিক্ত ব্যয় কমানো যায়। এসকল দোকানে অফারে অনেক কম দামে ভালো পণ্য পাওয়া যায়। তাই শপিং করার পূর্বে আপনার প্রয়োজনীয় জিনিস গুলির কোথাও অফার আছে কিনা সেই বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে শপিং করতে যান। অফার শুরুর প্রথম দিকেই কেনাকাটা করুন, এতে পছন্দসই পণ্যগুলো কিনতে পারবেন অনেক কম দামে।
যারা ওমরাহ হজ্ব করার জন্য সম্পূর্ণ নতুন, ইতিপূর্বে মক্কা-মদিনায় যাননি, তাদের ওমরাহ হজ্ব করার পূর্বে প্রত্যেকেরই ওমরাহ করার যাবতীয় নিয়মকানুন সম্পর্কে গভীর জ্ঞান অর্জন করা জরুরি। একজন ব্যক্তি পরিপূর্ণ বিশুদ্ধভাবে কিভাবে ওমরাহ হজ্ব পালন করতে পারবেন সেই বিষয়ের নিয়মকানুন গুলো বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
৪ – গরমে পানির বোতল সাথে নিয়ে বের হন।
বাহিরে গেলে সাধারণ মিনারেল ওয়াটারের বোতল না কিনে বরং বারবার ব্যবহার করা যাবে এমন একটি পানির বোতল কিনে সাথে রাখুন। ঘর থেকে বাইরে বের হবার সময় পানি ভরে সাথে করে নিন। এর ফলে বাহিরে গেলে পানির প্রয়োজন দেখা দিলে, মিনারেল ওয়াটার বোতল কেনার প্রয়োজন হবে না এবং বাড়তি টাকা খরচ হবে না। গরমকালে বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যয় কমানোর জন্য এই কাজটি খরচ অনেক কমিয়ে দেবে।
৫ – দরদাম করে কেনাকাটা করুন।
অনেকেই ইদানিং সুপারশপ থেকে সব ধরনের কেনাকাটা করেন।কারণ সুপার শপে প্রয়োজনীয় সব জিনিস পাওয়া যায়। সুপার শপে কেনাকাটায় খরচ বেশি হলেও অনেকে তা নিয়ে ভাবেন না। সুপার শপ এর পরিবর্তে আপনি স্থানীয় মুদি দোকান ও কাঁচা বাজার থেকে দরদাম করে অনেক কম দামে এবং টাটকা পণ্য কিনতে পারেন। তাছাড়াও কোন দোকানে কম খরচে ভালো জিনিসটা পাওয়া যায় সেটাও বের করার চেষ্টা করুন, এর ফলে অনেক খরচ বেঁচে যাবে এবং অতিরিক্ত ব্যয় কমানো যাবে ।
৬ – নির্দিষ্ট একটি বাজেট তৈরি করুন।
আপনার প্রতি মাসে আয়ের উপর ভিত্তি করে খরচের খাত কত হবে তার জন্য একটি নির্দিষ্ট বাজেট তৈরি করে ফেলুন।বাজেটের অতিরিক্ত টাকা গুলো সঞ্চয় করুন।এর ফলে অতিরিক্ত খরচ করার কোনো সুযোগ থাকবে না এবং অতিরিক্ত ব্যয় কমানো যাবে। আপনার প্রতিদিন কোথায় কত টাকা খরচ হচ্ছে তা লিখে রাখুন। মাস শেষে সেই হিসেব নিয়ে বসুন, যে সকল খাতে বেশি ব্যয় হচ্ছে সেখান থেকে খরচ কিছুটা কমিয়ে আনার চেষ্টা করুন।
৭ – হুট করে কিছু কেনার আগে ভাবুন।
আমরা হরহামেশাই এমন কিছু জিনিস কিনে ফেলি যার তেমন কোনো প্রয়োজন নেই। তাই,হুট হাট কোন কিছু কেনার পূর্বে ভালভাবে চিন্তা করে দেখতে হবে। আমাদের যদি একান্ত প্রয়োজন নাই হয় তবে কিনবো না। এভাবে অপ্রয়োজনীয়’ খরচ অনেকটাই এড়িয়ে চলা সম্ভব এবং অতিরিক্ত ব্যয় কমানো যাবে।
সর্বশেষ
অতিরিক্ত ব্যয় কমানো খুব কঠিন কিছু নয়। শুরুতেই অতিরিক্ত ব্যয় কমাতে না পারলেও হতাশ হয়ে যাবেন না। এটা ধীরে ধীরে চেষ্টার ফলে একসময় অতিরিক্ত ব্যয় কমাতে সফল হবেন।
প্রিয় পাঠক আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।