বিয়ের-কাবিননামা-কি-অনলাইনে-বিয়ের-কাবিননামা-তোলা-সম্ভব-তথ্য-বাংলা totthobangla বিয়ের-কাবিননামা-কি-অনলাইনে-বিয়ের-কাবিননামা-তোলা-সম্ভব-তথ্য-বাংলা totthobangla

বিয়ের কাবিননামা কিভাবে তুলতে হয়? বিয়ের কাবিননামা প্রয়োজনীয়তা কি? বিয়ের কাবিননামা না থাকলে কি ধরনের অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয় এসকল বিষয় নিয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব।

মুসলিম বিয়ের রেজিস্ট্রি ও বিয়ের কাবিননামা কি?

বিয়ের রেজিস্ট্রি হচ্ছে বিয়ের লিখিত দলিল বা বিয়ের কাবিননামা। বিয়ে রেজিস্ট্রি, বিয়ের কাবিননামা বা নিকাহ রেজিস্ট্রার করার জন্য আমাদের দেশে একটি আইন আছে। এটা নিকাহ বা বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার পর বিয়ের যাবতীয় তথ্যাবলী সরকারি রেজিষ্ট্রারে লিপিবদ্ধ করা হচ্ছে বিবাহ রেজিস্ট্রেশন বা বিয়ের কাবিননামা।বিবাহ রেজিস্ট্রেশনের কপি হচ্ছে বিবাহের প্রমাণপত্র বা বিয়ের কাবিননামা। মুসলিম বিবাহ রেজিস্ট্রেশন আইন ১৯৭৪ সালে কার্যকরী হয়।

বিয়ের রেজিস্ট্রেশন এর প্রয়োজনীয়তা কেন?

বিয়ের রেজিস্ট্রেশন এর প্রয়োজনীয়তা কেন?

◾ বিবাহ রেজিস্ট্রি বা বিয়ের কাবিননামা থাকলে এতে বিয়ের পর বিয়ের সত্যতা অস্বীকার করতে পারে না।

◾ বিবাহ রেজিস্ট্রি বা বিয়ের কাবিননামা থাকলে স্ত্রীর অনুমতি ব্যতীত স্বামী পুনরায় বিবাহ করলে স্ত্রী স্বামীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন।

◾ বিবাহ রেজিস্ট্রি বা বিয়ের কাবিননামা থাকলে বিয়ে হলে স্বামীর কাছ থেকে স্ত্রী ভরন পোষন আদায় করতে পারেন।

◾ বিবাহ রেজিস্ট্রি বা বিয়ের কাবিননামা থাকলে কাবিননামায় উল্লেখিত দেনমোহর স্ত্রী আদায় করতে পারেন যে ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট করা নাই সেক্ষেত্রে স্ত্রী ন্যায় সঙ্গত পরিমাণ দেনমোহর আদায় করতে পারেন। 

◾ বিবাহ রেজিস্ট্রি বা বিয়ের কাবিননামা থাকলে স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু হলে দুজনের মধ্যে যিনি বেঁচে থাকবেন তিনি মৃতের সম্পত্তি থেকে বৈধ অংশ আদায় করতে পারবেন।

উদাহরণ

রোজিনা এবং কামালের ধুমধামের সাথে বিয়ে হল।কিন্তু উৎসবের আড়ালে বিবাহ রেজিস্ট্রেশন বা বিয়ের কাবিননামা কথাটি সবাই বেমালুম ভুলে যায়! বিয়ের কিছুদিন পরপরই রোজিনা এবং কামালের সংসারে অশান্তি শুরু হয়, বিবাহ বিচ্ছেদের মতো ঘটনা ঘটে! কামাল, রজিনাকে তার প্রাপ্য দেনমোহর ও ভরণপোষণ দিতে অস্বীকৃতি জানায়।যদি এই বিয়েটি রেজিস্ট্রি করার থাকতো বিয়ের কাবিননামা থাকতো, তাহলে সহজেই আদালতে গিয়ে রজিনা তার প্রাপ্য দেনমোহর ও ভরন-পোষন আদায় করতে পারতেন।কিন্তু বিয়ে রেজিস্ট্রি না হওয়ায় বিয়ের কাবিননামা না থাকায় এ অবস্থায় দেনমোহর ও ভরন-পোষন আদায় করা খুব কঠিন।

১০টি খাবার খেয়ে তারুণ্য ও যৌবন ধরে রাখুন।

বিবাহ রেজিস্ট্রেশন বিয়ের কাবিননামা না করা অপরাধ!

বিবাহ সম্পন্ন হওয়ার পর বিবাহ রেজিস্ট্রেশন বিয়ের কাবিননামা না করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। যদি কাজির অনুপস্থিতে বিয়ে হয়, সে ক্ষেত্রে পরবর্তীতে কাজী অফিসে গিয়ে বিবাহ রেজিস্ট্রেশন বিয়ের কাবিননামা করাতে হবে। যিনি বিবাহ সম্পন্ন করেছেন তিনিই নিকাহ রেজিস্ট্রার এর নিকট প্রতিবেদন পেশ করবেন।

বিবাহ রেজিস্ট্রেশন বিয়ের কাবিননামা না করার শাস্তি

১৯৭৪ সালের মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রেশন) আইনে (সংশোধিত ৮ ই মার্চ ২০০৫) বলা হয়েছে, যে সমস্ত বিবাহ রেজিস্ট্রেশন বিয়ের কাবিননামা সম্পাদিত হয় নি, সেসকল বিয়ে যে বা যারা করিয়েছেন, তিনিই বিবাহ রেজিস্ট্রেশন করার উদ্দেশ্যে উক্ত বিয়ের খবর নিকাহ রেজিস্ট্রার এর নিকট পেশ করবেন।যদি কেহ বিবাহ সম্পন্ন করার পর গোপন রাখেন, বিবাহ রেজিস্ট্রেশন বিয়ের কাবিননামা সম্পন্ন না করেন, আইনগতভাবে ওই ব্যক্তির দুই বছরের কারাদণ্ড বা ৩০০০/- তিন হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

বিয়ের কাবিননামা সংগ্ৰহ

বিবাহ সম্পন্ন হবার পরপরই যে কাজই আপনার বিয়ে পড়িয়েছিলেন, তিনিই বিয়ের কাবিননামার বিস্তারিত রেজিস্টার খাতায় লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন। আপনার বিবাহ সম্পন্ন হওয়ার পর কাজী কর্তিক যে রশিদ দেওয়া হয়েছে, সেই রশিদ নিয়ে পরবর্তীতে কাজী অফিসে গিয়ে, বিয়ের কাবিননামা সংগ্রহ করতে পারবেন। অথবা, আপনার যদি বিয়ের বছর, মাস, দিন, তারিখ সঠিকভাবে মনে থাকে, তাহলে কাজী সাহেবের সাথে যোগাযোগ করলেও উনি রেজিস্ট্রেশন খাতা যাচাই করে বিয়ের কাবিননামা দিতে পারবেন।

সর্বশেষ পরামর্শ

বাংলাদেশের প্রতিটি ইউনিয়নে সরকার কর্তৃক নিয়োজিত একজন করে নিকাহ রেজিস্টার আছেন। তিনি বিবাহ রেজিস্ট্রেশন বিয়ের কাবিননামা করবেন।যদি বিবাহ সম্পাদনের দিন বিবাহ রেজিস্ট্রেশন বিয়ের কাবিননামা করা সম্ভব না হয়ে থাকে, তবে বিবাহের দিন থেকে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে নিকাহ রেজিস্ট্রার এর কার্যালয় বিবাহ রেজিস্ট্রেশন বিয়ের কাবিননামা করতে হবে।বিয়ে রেজিস্ট্রেশনের সময় কাজী সাহেব যে রশিদ দিবেন, সেই রশিদ সংগ্রহ করে রাখতে হবে।কারণ কাবিননামা উঠানোর সময় এ রশিদ দেখালে, কাজীকে নির্ধারিত ফি ছাড়া অতিরিক্ত ফি দিতে হয় না। রশিদ না থাকলে, কাজী অফিস কে  তল্লাশি ফি বাবদ পতি পাতার জন্য ১/- এক টাকা দিতে হয়।  আপনার বিয়েটি রেজিষ্টারে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে কি-না সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

কাবিননামা বিষয়ে যা জানা জরুরি




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *