বাড়ি ভাড়ার আইন অনুযায়ী বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্র ভাড়াটিয়া এবং বাড়িওয়ালা উভয়ের জন্যই নিরাপদ। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহর অঞ্চলে চাকরিজীবী, শ্রমজীবি, পেশাজীবি সহ বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করেন। এই বাড়ি ভাড়ার প্রেক্ষিতে বেশিরভাগ সময় শোনা যায় ভাড়াটিয়া বাড়িয়ালার দ্বন্দ্ব। বাড়ি ভাড়া নিয়ে ভাড়াটিয়া বাড়িওয়ালার দ্বন্দ্ব কিছু কিছু ক্ষেত্রে থানা-পুলিশ এমন কি মামলায় পর্যন্ত গড়ায়। বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্র ভাড়াটিয়া এবং বাড়িয়ালা উভয়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্র কেন প্রয়োজন?
বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্র (House Rent Agreement) থাকলে বাড়িওয়ালা যেমন ভাড়াটিয়ার সাথে আইনবহির্ভূত অন্যায় কোন কিছু করা থেকে বিরত থাকবেন তদ্রূপ ভাড়াটিয়া ও বেআইনি অবৈধ কার্যকলাপ করা থেকে সতর্ক থাকবেন। বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্র (House Rent Agreement) না থাকলে ভাড়াটিয়া বাড়িতে অবস্থানকালে যদি কোন বেআইনি কার্যকলাপ করেন, যেমন – জঙ্গিবাদ, মাদক, হত্যা-ধর্ষণ এ ধরনের কার্যকলাপ হলে আইনগত ভাবে প্রথমেই প্রশাসন কে বাড়িওয়ালা, বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্র দেখাতে হয়।
বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্র থাকলে ভাড়াটিয়া নিয়মিত ভাড়া পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে অথবা ফ্ল্যাটে জোরপূর্বক অবৈধ কার্যকলাপ করলে অথবা বাড়ি দখল করতে চাইলে বাড়িওয়ালা ভাড়াটিয়ার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিতে পারে। তদ্রূপ বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্র (House Rent Agreement) থাকলে ভাড়াটিয়ার সাথে বাড়িওয়ালা জুলুম বা অন্যায় কোন আচরণ করতে পারন না। যেমন বাড়িওয়ালা ইচ্ছামত অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতে পারবেন না। ইচ্ছামতো অতিরিক্ত কোন চার্জ ধার্য করতে পারবেন না। ইচ্ছামত যখন-তখন ভাড়াটিয়াকে বাড়িওয়ালা উচ্ছেদ করতে পারবেন না। যদি চুক্তিপত্র থাকে তাহলে অন্যায় কিছু বাড়িওয়ালা করে থাকলে ভাড়াটিয়া বাড়িওয়ালার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিতে পারবেন।
বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্র কিভাবে তৈরি করতে হয়?
বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্র গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে করতে হবে। প্রয়োজনে চুক্তিপত্রটি রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে। এর ফলে বাড়িওয়ালা এবং ভাড়াটিয়া উভয়ের জন্যই অনাকাঙ্ক্ষিত ঝামেলা এড়ানো সম্ভব।
বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্রে কি কি উল্লেখ করা জরুরি?
বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্র (House Rent Agreement) তেরিতে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করা জরুরী। যেমন – বাড়ি ভাড়ার পরিমাণ, ইউটিলিটি বিল,বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি, সাবলেট, বাড়ি ছাড়ার নোটিশ ও বাড়ির ডিজাইন এর পরিবর্তন পরিবর্ধন এর বিষয়গুলি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে।
বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্রের সঠিক নিয়ম। House Rent Agreement.
ফ্ল্যাট বা বাসা ভাড়া দেওয়া/নেয়ার সময় একটি চুক্তিপত্র/এগ্রিমেন্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে চুক্তিপত্রটি সঠিক নিয়ম মাফিক করা যাতে বাড়িওয়ালা এবং ভাড়াটিয়া উভয়ই আইনগতভাবে নিরাপদ থাকেন। এই চুক্তিপত্র/এগ্রিমেন্ট কিভাবে করতে হয় এ বিষয়ে নিচে একটি নমুনা দেওয়া হয়েছে। আশা করি এই নমুনাটি পড়লে ভাড়ার চুক্তিপত্র (House Rent Agreement) সঠিক নিয়মে সম্পন্ন করতে একটি সুস্পষ্ট ধারণা পাবেন।
বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্রে যে বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা জরুরী।
একটি স্ট্যান্ডার্ড বাড়ি ভাড়া চুক্তিপত্রে নিম্মোক্ত বিষয়গুলি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
◾ ভাড়াটিয়া এবং বাড়িওয়ালার নাম ও স্থায়ী অস্থায়ী ঠিকানা।
◾ ভাড়াটিয়া এবং বাড়িওয়ালার স্বাক্ষর ও আঙ্গুলের ছাপ।
◾ মাসিক ভাড়ার পরিমাণ।
◾ রক্ষণাবেক্ষণ খরচ ও অন্যান্য বিষয়াদি।
◾ বাড়ি ভাড়ার একটি নির্দিষ্ট সময়কাল।
◾ বাড়িতে অবস্থানকালে ভাড়াটিয়ার দায়িত্ব ও অধিকার সমূহ।
◾ ভাড়াটিয়ার প্রতি বাড়িওয়ালার দায়িত্ব অধিকার সমূহ।
বাসা ভাড়ার চুক্তিপত্র রেজিস্ট্রেশন এর জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র।
বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্র (House Rent Agreement) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে দুই থেকে তিনজন সাক্ষীর স্বাক্ষরের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হয় এবং সাথে ভাড়াটিয়া এবং বাড়িওয়ালার দুই কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি, জাতীয় পরিচয় পত্র ভোটার আইডি কার্ড এর কপি দিতে হবে। জাতীয় পরিচয় পত্র ভোটার আইডি কার্ড না থাকলে পাসপোর্ট অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্স এর কপি দিতে হবে।
জাতীয় পরিচয় পত্র, ভোটার আইডি কার্ড বা এনআইডি কার্ডে ভুল তথ্য থাকলে, সেই এনআইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্র নিয়ে জাতীয় বা সরকারী সেবা মূলক কাজ করতে গেলে নানা রকম সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। তাই জাতীয় পরিচয়পত্র, ভোটার আইডি কার্ড বা এনআইডি কার্ডে ভুল থাকলে এটি যত দ্রুত সম্ভব সংশোধন করা জরুরি।
চুক্তিপত্রের নমুনা প্রথম পাতা।
(হাতে লিখে অথবা কম্পিউটারে কম্পোজ করে নিম্নোক্ত নমুনা অনুযায়ী আপনার বাসা ভাড়ার চুক্তিপত্র (House Rent Agreement) তৈরি করতে পারেন।)
নাম ——————- পিতার নাম—————— জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর—————— ঠিকানা: গ্রাম/পাড়া ————– রাস্তার নাম —————- ডাকঘর ————– থানা—————- জেলা——————জাতীয়তা – জন্মসূত্রে বাংলাদেশি।
———প্রথম পক্ষ (বাড়ি/ফ্ল্যাট মালিক)
নাম ——————- পিতার নাম—————— জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর—————— ঠিকানা: গ্রাম/পাড়া ————– রাস্তার নাম —————- ডাকঘর ————– থানা—————- জেলা——————জাতীয়তা – জন্মসূত্রে বাংলাদেশি।
———দ্বিতীয় পক্ষ (ভাড়াটিয়া)
প্রথম পক্ষ ফ্ল্যাট মালিক জনাব মোহাম্মদ বাতেন মিয়া গুলশান আবাসিক এলাকায় অবস্থিত তাহার বাড়ি/ফ্ল্যাট টি ভাড়ার প্রস্তাব করিলে, দ্বিতীয় পক্ষ জনাব মোঃ ফয়সাল আহমেদ উক্ত ফ্ল্যাট ভাড়া নিতে ইচ্ছা পোষণ করেন। উভয়ের সম্মতিতে নিম্নোক্ত শর্তসাপেক্ষে অত্র চুক্তিপত্র সম্পাদিত হইল।
ভাড়া দেওয়া বাড়ি/ফ্ল্যাট এর বিবরণ
ফ্ল্যাট নাম্বার – এ ৪,বাসা নাম্বার – ৫২, রোড – নাম্বার ২৮, গুলশান আবাসিক এলাকা, ঢাকা – ১২১২। (গাড়ি পার্কিং ব্যতীত)
নিম্নোক্ত শর্তসমূহ
১। এই চুক্তিপত্র ১ জুন ২০২৩ তারিখ হইতে কার্যকর হইবে বলিয়া গণ্য করা হইল, এবং তাহা আগামী ৩০ জুন ২০২৪ সাল পর্যন্ত বলবৎ থাকিবে।
চলমান পাতা ০২
পাতা নাম্বার ০২
২। প্রথম পক্ষ চুক্তি কালীন সময়ের জন্য জামানত বাবদ অগ্রিম —– এত টাকা গ্রহণ করিয়া, দ্বিতীয় পক্ষ ভাড়াটিয়া কে বাসা/ফ্লাটটি বুঝাইয়া দিবেন। দ্বিতীয় পক্ষ ভাড়াটিয়া ফ্লাট ছাড়ার জন্য মনস্থ করিলে,তাহার জামানতের —- এত টাকা প্রথম পক্ষ ফেরত দিতে বাধ্য থাকিবে। অগ্রিম টাকা হইতে ভাড়া বাবদ টাকা কর্তন হইবে না।
৩। ফ্ল্যাটের মাসিক ভাড়া —- টাকা দ্বিতীয় পক্ষ প্রতিমাসের ১০ তারিখের মধ্যে প্রথম পক্ষ কে পরিশোধ করিবেন। পর পর দুই মাস ভাড়া প্রদানে ব্যর্থ হইলে ডিফল্ডার হিসেবে ফ্লাট হইতে উচ্ছেদ যোগ্য বিবেচিত হইবেন।
৪। বিশেষ প্রয়োজনে উভয়পক্ষই ভাড়াকৃত ফ্ল্যাটটি খালি করিয়া দিতে বাধ্য থাকিবেন। সে ক্ষেত্রে উভয় পক্ষ কমপক্ষে ২ মাস আগে নোটিশ প্রদান করিবেন।
৫। দ্বিতীয় পক্ষ (ভাড়াটিয়া) ভাড়াকৃত ফ্ল্যাটটি শুধুমাত্র বসবাসের জন্য ব্যবহার করিবেন। এই ফ্ল্যাট টি কোন প্রকার অফিস, কারখানা বা ডোডাউন হিসাবে ব্যবহার করিতে পারিবেন না।
৬। দ্বিতীয় পক্ষ (ভাড়াটিয়া) তফসিলে বর্ণিত ফ্লাটে কোন প্রকার অবৈধ বা অসামাজিক কার্যকলাপ করিতে পারিবেন না। যদি অবৈধ কোন কার্য করিয়া থাকেন তার জন্য দ্বিতীয় পক্ষ দায়ী থাকিবেন, এবং অত্র ফ্লাইট হতে উচ্ছেদ যোগ্য হইবেন।
৭। তফসিল বর্ণিত ফ্ল্যাটটির যাবতীয় আনুষাঙ্গিক মাসিক সার্ভিস চার্জ, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ইত্যাদি বিল, দ্বিতীয় পক্ষ বহন করিবে এবং বিল পরিশোধ করিয়া পরিশোধের কপি প্রথম পক্ষ মালিককে প্রতিমাসে দিতে বাধ্য থাকিবেন।
৮। তফসিল বর্ণিত ফ্ল্যাটটিতে ভাড়াটিয়া কর্তৃক কোন প্রকার ক্ষতিগ্রস্ত হইলে, দ্বিতীয় পক্ষ ভাড়াটিয়া তাহার নিজ খরচে মেরামত করতে বাধ্য থাকিবেন।
৯। দ্বিতীয় পক্ষ ভাড়াটিয়া যদি ফ্ল্যাটের আরো সৌন্দর্যের প্রয়োজনে অতিরিক্ত ডেকোরেশন করা দরকার মনে করেন, তাহলে মালিকের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে, দ্বিতীয় পক্ষ নিজ খরচে তাহা করিতে পারিবেন। উক্ত কাজের জন্য যদি ফ্ল্যাটের কোন প্রকার ক্ষতি সাধিত হয়,দ্বিতীয় পক্ষ নিজ খরচে মেরামত করতে বাধ্য থাকিবেন।
১০। তফসিলে বর্ণিত ফ্ল্যাটটির চুক্তি শেষ হওয়ার পর উভয়পক্ষের সম্মতিতে পুনরায় চুক্তিপত্রের মেয়াদ বাড়ানো যাইতে পারে।
চলমান পাতা ০৩
পাতা নাম্বার ০৩
আমরা উভয় পক্ষ উক্ত চুক্তিপত্র পড়িয়া, এতদ্বার্থে, সুস্থ শরীরে, সজ্ঞানে, স্বেচ্ছায়, সুস্থ মস্তিষ্কে, নির্ভীকচিত্তে এবং অন্যের বিনা প্ররোচনায় অত্র চুক্তিপত্রের শর্তাবলীর মর্ম ভালোভাবে অবগত হইয়া, নিম্নলিখিত স্বাক্ষীগণের সম্মুখে অত্র চুক্তিপত্র সম্পাদন করিলাম।
তারিখ ———– ইং।
——————————— ————————————
প্রথম পক্ষ মালিকের স্বাক্ষর দ্বিতীয় পক্ষ ভাড়াটিয়ার স্বাক্ষর
সাক্ষীগনের স্বাক্ষর
১। —————————
২। —————————
৩।—————————
সর্বশেষ
আমরা এখানে একটি গতানুগতিক বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্র নমুনা উপস্থাপন করছি। এই নমুনার মতই বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্র তৈরি করতে হবে এমনটি নয়। আপনি চাইলে এই নমুনা মধ্যে আরো কোনো শর্ত অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন এবং একজন আইনজীবীর কাছ থেকেও পরামর্শ নিয়ে একটি নিরাপদ ও সঠিক বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্র তৈরি করতে পারেন।
বাড়ি ভাড়া সংক্রান্ত সাধারণ কিছু প্রশ্ন ও উত্তর।
ভাড়াটিয়াকে বাড়ি ভাড়ার রশিদ কেন দিতে হবে?
বাড়ি ভাড়ার আইন অনুযায়ী বাড়িওয়ালার কাছ থেকে বাড়ি ভাড়া পরিশোধ এর রশিদ পাওয়াও ভারাটিয়ার অধিকার।বাড়ীওয়ালা প্রতিবার ভাড়া গ্রহনের সাথে সাথেই ভাড়াটিয়াকে উক্ত পরিশোধিত ভাড়ার রশিদ প্রদান করবেন।বাড়ি ভাড়া রশিদ প্রদানে বাড়িওয়ালা ব্যর্থ হলে ভাড়াটিয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে আদায়কৃত টাকার দ্বিগুণ অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।তাই ভবিষ্যতে কোনো আইনগত ঝামেলা এড়ানোর জন্য ভাড়াটিয়াকে পরিশোধিত ভাড়ার রশিদ দেওয়া ভালো।
ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে অগ্রিম ভাড়া বাবদ কত টাকা নেওয়া যায়?
বাড়ি ভাড়া আইন মোতাবেক কোন বাড়ীওয়ালা,ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে ০১ (এক) মাসের ভাড়ার বেশী টাকা অগ্রিম হিসেবে নিতে পারবেন না।
বাড়ীওয়ালা চাইলেই কি ভাড়াটিয়াকে উচ্ছেদ করতে পারে?
ভাড়াটিয়া যদি বাড়ি ভাড়া চুক্তিপত্র (House Rent Agreement) এর কোন শর্ত লংঘন না করেন এবং নিয়মিত বাড়ি ভাড়া পরিশোধ করে থাকেন তাহলে বাড়িওয়ালা চাইলেই তার ভাড়াটিয়াকে ইচ্ছেমতো বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করতে পারবে না। যদি বাড়ি ভাড়া চুক্তিপত্র এর মেয়াদ শেষ হয়ে যায় এবং বাড়ীওয়ালা ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে বাড়ি ভাড়া নিতে থাকেন, তাহলে এটাই ধরে নেয়া হবে যে, বাড়ীওয়ালা উক্ত চুক্তিপত্রটি পুনরায় নবায়ন করেছেন। ভাড়াটিয়া নিয়মিত ভাড়া পরিশোদ করা অবস্থায় বাড়ীওয়ালা যদি তাকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করার চেষ্টা করেন, তাহলে ভাড়াটিয়ার আইনের আশ্রয় নেওয়ার অধিকার রয়েছে।
কি কি কারণে ভাড়াটিয়াকে বাড়িওয়ালা উচ্ছেদ করতে পারেন?
বাড়ীওয়ালা বেশ কিছু কারণে তার বাড়ি থেকে ভাড়াটিয়াকে উচ্ছেদ করতে পারেন। বাড়িভাড়া আইনের আওভায় ৪ চারটি কারণে ভাড়াটিয়াকে উচ্ছেদ করা যায়।
১। বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্র (House Rent Agreement) অনুযায়ী ভাড়ার সময়সীমা নির্ধারিত থাকলে, উক্ত সময়ের পর ভাড়াটিয়াকে বাড়িওয়ালা উচ্ছেদ করতে পারেন।
২। বাড়িওয়ালার অনুমতি ছাড়া ভাড়াটিয়া যদি বাড়ির কোন নকশা পরিবর্তন করেন। ভাড়াটিয়া অন্য লোকের কাছে উক্ত বাসা হস্তান্তর করেন। অথবা বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্র সাবলেট দেওয়া নিষেধ থাকলে।
৩। বাড়ি ভাড়া বাকি থাকলে।
৪। বাড়িতে কোন বিশৃঙ্খলা বা ক্ষতিকর কোনকাজ করলে।
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ১০৬ ধারা অনুযায়ী ভাড়াটিয়াকে বাড়িওয়ালা উচ্ছেদ করতে পারেন। বাসা/ফ্ল্যাট,দোকান,অফিস,গুদাম এসব যদি মাসিক ভাড়ায় চুক্তিতে ব্যবহার করা হয়, সে ক্ষেত্রে ভাড়াটিয়াকে ১৫ দিনের নোটিশে উচ্ছেদ করা যায়। বর, চুক্তি যদি বার্ষিক ইজারা হয় অথবা শিল্পকারখানা হয়, সেক্ষেত্রে ৬ মাসের নোটিশে ভাড়াটিয়াকে উচ্ছেদ করা যায়।
বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রক এর কাজ কি? ভাড়াটিয়া কখন বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রকের শরণাপন্ন হবেন?
বাড়ি ভাড়া আইনে ঘর ভাড়া নিয়ন্ত্রণ এবং সমস্যা সমাধানের জন্য বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রক রয়েছে। ঘর ভাড়া নিয়ন্ত্রণ হিসেবে সিনিয়র সহকারী জজ আদালতগুলো এই দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
কোন কারনে বাড়ীওয়ালা যদি ভাড়া গ্রহনে অস্বীকৃতি জানায়, ভাড়াটিয়াকে বাড়ি ভাড়া চুক্তিপত্রের উল্লেখিত সময়ের মধ্যে অথবা যদি চুক্তির মেয়াদ না থাকে পরবর্তী মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে মানি অর্ডারযোগে বাড়িওয়ালার ঠিকানায় বাড়ি ভাড়া প্রেরণ করতে হয়। যদি মানি অর্ডার যোগে প্রেরিত বাড়ি ভাড়াও বাড়ীওয়ালা গ্রহণ না করে, সে ক্ষেত্রে মানি অর্ডার ফেরৎ আসার ১৫ দিনের মধ্যে, ভাড়াটিয়া বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রক অর্থাৎ সিনিয়র সহকারী জজের বরাবর দরখাস্ত দিয়ে বাড়ি ভাড়া জমা দিতে হবে।
এই নিয়মে বাড়ি ভাড়া জমা দিয়ে যেতে হবে। যতদিন বাড়ীওয়ালা আপোষে বাড়ি ভাড়া গ্রহণ না করবে ততদিন পর্যন্ত।একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখতে হবে, এই নিয়মে ভাড়াটিয়াকে কোনভাবে বাড়ি ভাড়া দেওয়া ব্যর্থ হওয়া চলবে না। বছরের ডিসেম্বর মাসে আদালত বন্ধ থাকে। তাই ডিসেম্বর মাসের ভাড়া নভেম্বর মাসে অগ্রিম জমা করতে হবে।
তথ্যসূত্র
ব্যয় কমানোর সহজ ৭টি কৌশল
আমরা যদি একটু চেষ্টা করি আমাদের অতিরিক্ত ব্যয় কমিয়ে আনতে পারি, এবং ভবিষ্যতের জন্য কিছুটা সঞ্চয় ও করতে পারি। আজকে আমরা বর্তমান পরিস্থিতিতে অপ্রয়োজনীয় এবং অতিরিক্ত ব্যয় কমিয়ে ভবিষ্যতের জন্য কিছুটা সঞ্চয় কিভাবে করব তার ওপরে কিছু টিপস নিয়ে আলোচনা করব। আসুন টিপস গুলো জেনে নেওয়া যাক। বিস্তারিত>>>>>>>
মৃত্যু নিবন্ধন সনদ কি? মৃত্যু নিবন্ধন সনদ কেন প্রয়োজন?
একজন সচেতন নাগরিকের জন্ম নিবন্ধন সনদ থাকাটা যেমন জরুরী, তেমনি ভাবে বাংলাদেশের একজন নাগরিকের জন্ম মৃত্যু নিবন্ধন আইন অনুযায়ী মৃত্যু মৃত্যুর পর দ্রুত সম্ভব মৃত্যু নিবন্ধন করাটাও জরুরী। মৃত্যু নিবন্ধন সনদ না থাকলে মৃত্যুর পর ওয়ারিশগনের, মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি, ব্যাংকে জমাকৃত অর্থ, শিল্প কারখানা মালিকানায় অনেক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। সহজে মৃত্যু নিবন্ধন সনদ তৈরি বিস্তারিত >>>