বর্তমানে প্রায় সকল ব্যবসায়ীদের কাছে ট্রেড লাইসেন্স (Trade license) একটি পরিচিত শব্দ। আপনার যে কোন ধরনের ব্যবসা শুরু করার প্রথম ধাপটি হলো ট্রেড লাইসেন্স তৈরি করা। একজন ব্যবসায়ীর ব্যবসার ধরনের পরিচিতি ট্রেড লাইসেন্স এর মাধ্যমে বোঝা যায়। বিশ্বের প্রায় বিভিন্ন দেশে ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা করা দণ্ডনীয় অপরাধ। তাই আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে বৈধভাবে উল্লেখ করার জন্য,ব্যবসা শুরু করার পূর্বেই আপনাকে ট্রেড লাইসেন্স তৈরি করে নিতে হবে। অনেকেই ট্রেড লাইসেন্স তৈরি করার পূর্ব ধারণা না থাকার জন্য, তাড়াহুড়ো করে ট্রেড লাইসেন্স তৈরি করতে গিয়ে অনেক ভুল করে ফেলেন। যার ফলে ভুল ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে ব্যবসা করার বৈধতা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই একটি পরিপূর্ণ নির্ভুল ট্রেড লাইসেন্স কিভাবে সহজে তৈরি করবেন সে বিষয়ে আলোচনা করব।
ট্রেড লাইসেন্স কি?
ট্রেড লাইসেন্স হল ব্যবসার অনুমতি পত্র। আপনার ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করার জন্য সরকার থেকে সরকারের ভৌগোলিক এক্তিয়ারের মাঝে ব্যবসা করার অনুমতি পত্র কেই ট্রেড লাইসেন্স বলে। প্রতিটি ব্যবসার ধরন অনুযায়ী সাধারণত আলাদা আলাদা ভাবে ট্রেড লাইসেন্স তৈরি করতে হয়। একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের এবং ব্যবসায়ীর পরিচয়পত্র হলো ট্রেড লাইসেন্স। সে কারণে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন প্রয়োজনে তাদের কাজের প্রমাণ হিসেবে ট্রেড লাইসেন্স ব্যবহার করতে পারেন।
ট্রেড লাইসেন্স কেন প্রয়োজন?
সরকারের ভৌগোলিক এরিয়ার মধ্যে ব্যবসা করার অনুমতি পত্র হল ট্রেড লাইসেন্স।তাই, ব্যবসা করার জন্য সরকারের অনুমতি পত্র হিসেবে ট্রেড লাইসেন্স প্রয়োজন। তাছাড়াও ট্রেড লাইসেন্স আরো অনেক বিশেষ বিশেষ কাজে প্রয়োজন।যেমন – প্রায় প্রতিটি ব্যবসার জন্যই বিভিন্ন প্রয়োজনে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংক একাউন্ট খোলা অত্যন্ত জরুরী। যেকোন ব্যাংকেই ব্যবসায়িক একাউন্ট খোলার জন্য ট্রেড লাইসেন্স থাকা প্রয়োজন। ছোট-বড় অনেক প্রতিষ্ঠানকেই তাদের ব্যবসার প্রসারের জন্য বিভিন্ন ব্যবসায়িক চুক্তি করতে হয়।
এসকল চুক্তির জন্য ট্রেড লাইসেন্সের প্রয়োজন। ব্যবসার প্রসার বৃদ্ধি এবং ব্যবসায়িক বিভিন্ন সুবিধা পেতে বা ব্যবসা সম্পর্কে বিভিন্ন জ্ঞান ও তথ্য পেতে একটি ব্যবসায়িক এসোসিয়েশনে যোগদানে প্রায় সবসময়ই ব্যবসায়ীদের সাহায্য করে। এসকল ব্যবসায়িক এসোসিয়েশনে যোগ দেওয়ার জন্য অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ট্রেড লাইসেন্স দেখাতে হয়। বিদেশ থেকে কোন পণ্য আনতে বা বিদেশে রপ্তানি করতে, আমদানি ও রপ্তানি লাইসেন্স পেতে হলেও ট্রেড লাইসেন্স প্রয়োজন হয়। ব্যবসার জন্য কখনো ব্যাংক থেকে প্রজেক্ট লোন নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। এধরণের লোন পেতে হলে ব্যবসায়ীকে ব্যাংকে ট্রেড লাইসেন্স প্রদর্শন করতে হয়।
ট্রেড লাইসেন্স কোথা থেকে সংগ্রহ করবো বা ট্রেড লাইসেন্স পাওয়ার জন্য কোথায় যেতে হবে?
আপনার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান টি যে এলাকায় অবস্থিত।সেটি যদি ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা অথবা সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন হয়। আপনাকে তাদের সংশ্লিষ্ট অফিস থেকে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হবে। কারণ বাংলাদেশে ট্রেড লাইসেন্স সাধারণত স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা গুলো প্রদান করে থাকে। আমাদের দেশে ২৯৪ টি ক্যাটাগরিতে ট্রেড লাইসেন্স প্রদান করে থাক। এসকল ক্যাটাগরি দেশের সকল সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন এলাকার জন্য প্রযোজ্য। আপনি নুতন ট্রেড লাইসেন্স করার সময়, আপনার ব্যবসার ধরন অনুযায়ী ট্রেড লাইসেন্সে ব্যবসার ক্যাটাগরি নির্বাচিত করতে হবে।কারণ, এটি ভুল হলে ট্রেড লাইসেন্স পেতে এবং পরবর্তীতে ব্যবসা করতে অনেক ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।
ব্যবসার ক্যাটাগরি অনুযায়ী ট্রেড লাইসেন্স এর ধরন কি কি?
২৯৪ টি ক্যাটাগরি কে মূলত তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছ।
(ক) সাধারণ দোকান বা ব্যবসা
সকল ধরনের মুদির দোকান ও সকল ছোট ব্যবসা কে (সাধারণ দোকান বা ব্যবসা) ভাগে ধরা হয়েছে। এ ধরনের ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স পাওয়া খুব সহজ এবং খরচ অনেক কম।
এই ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স এর জন্য যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন।
১. নির্দিষ্ট আবেদন ফরম পূরণ।
২. নিজস্ব জায়গায় দোকান হলে ইউটিলিটি বিল ও হালনাগাদকৃত হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করার ফটোকপি।
৩. নির্দিষ্ট ভাড়ার চুক্তিতে দোকান ব্যবহার করলে ৩০০ টাকার জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প কাগজে লেখা দোকান ভাড়ার চুক্তি পত্রের ফটোকপি।
৪. আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি।
৫. আবেদনকারীর ৩ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
৬. দুই বা ততোধিক ব্যক্তির যৌথভাবে পরিচালিত ব্যবসার ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীগণের ১৫০ অথবা ৩০০ টাকার জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প কাগজে ব্যবসা যৌথভাবে পরিচালনা করার অঙ্গীকারনামা ও শর্তাবলী।
(খ) কারখানা বা ফ্যাক্টরি অথবা শিল্প প্রতিষ্ঠান
পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এবং অনেক বেশী বা কম শ্রমিক নিয়ে কাজ করার শিল্পপ্রতিষ্ঠান অথবা এ ধরনের সকল ছোট বড় কারখানা কে (কারখানা বা ফ্যাক্টরি অথবা শিল্প প্রতিষ্ঠান) ভাগে ধরা হয়েছে।
এই ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স এর জন্য যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন।
১. নির্দিষ্ট আবেদন ফরম।
২. আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি।
৩. ডি.সি.সি-এর নিয়মাবলী মেনে চলা হবে তা স্বীকার করে ১৫০ টাকার জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারপত্র।
৪. প্রস্তাবিত কারখানা বা ফ্যাক্টরির আশেপাশের অন্যান্য স্থাপনার মালিকের অনুমতিপত্র বা অনাপত্তিনামা।
৫. প্রতিষ্ঠানের অবস্থান চিহ্নিত করার জন্য কারখানা অথবা ফ্যাক্টরির পার্শ্ববর্তী অবস্থান বা স্থাপনার বিবরণ সহ নকশা বা মানচিত্র।
৬. ফায়ার সার্ভিস থেকে নেওয়া অগ্নিনির্বাপণ প্রস্তুতি সংক্রান্ত প্রত্যয়নপত্র।
৭. পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিবেশ সংক্রান্ত অনাপত্তিপত্র।
৮. ৩ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
(গ) অন্যান্য
উপরের দুটি ধরন ছাড়াও আরো অনেক ধরনের ব্যবসা রয়েছে। যেমন- সিএনজি স্টেশন বা অন্যান্য দাহ্য পদার্থের ব্যবসা, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, লিমিটেড কোম্পানী, প্রিন্টিং প্রেস, আবাসিক হোটেল, রিক্রুটিং এজেন্সি, অস্ত্র ও গোলা বারুদ বিক্রি, ঔষধ, ট্রাভেলিং এজেন্সি ইত্যাদি। এগুলো কে ভাগ করা হয়েছে (অন্যান্য) ক্যাটাগরিতে। এগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় ট্রেড লাইসেন্স করার পদ্ধতিতে বেশ কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।এই ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স এর জন্য যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন।
১. সিএনজি স্টেশন এবং অন্যান্য দাহ্য পদার্থঃ- এধরণের ব্যবসা শুরু করতে বিস্ফোরক অধিদপ্তর বা ফায়ার সার্ভিস এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতিপত্র প্রয়োজন হবে।
২. ট্রাভেলিং এজেন্সি: এধরণের প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স পেতে প্রয়োজন হবে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের অনুমতি।
৩. লিমিটেড কোম্পানিঃ- এধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রয়োজন হবে- মেমোরেন্ডাম অব আর্টিকেল,সার্টিফিকেট অব ইনকর্পোরেশন।
৪. ঔষধ ও মাদকদ্রব্য:- এধরনের ব্যবসার ক্ষেত্রে সাধারণ ঔষধের দোকানের জন্য সাধারণ ব্যবসার কাগজপত্র সহ অতিরিক্ত হিসেবে ড্রাগ লাইসেন্সের কপি।
৫. অস্ত্র ও গোলাবারুদ:- অস্ত্রের লাইসেন্স।
৬. রিক্রুটিং এজেন্সি:- মানবসম্পদ রপ্তানি ব্যুরো থেকে নেওয়া নির্দিষ্ট লাইসেন্স।
৭. ক্লিনিক বা ব্যক্তিগত হাসপাতালঃ- এধরনের প্রতিষ্ঠানের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের অনুমোদনপত্র প্রয়োজন হবে।
৮. ছাপাখানা ও আবাসিক হোটেল: এধরণের ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স পেতে ডিপুটি কমিশনার কর্তৃক অনুমতিপত্র প্রয়োজন হবে।
টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার নিয়ম। (How to cancel Tin certificate?
বাংলাদেশের নিয়মিত আয়কর দাতা সহ প্রায় সকলের কাছেই টিন সার্টিফিকেট Tin certificate শব্দটি পরিচিত। বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে বর্তমান ডিজিটাল যুগে, অনেক সময় অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের টিন নাম্বার এবং টিন সার্টিফিকেট Tin certificate প্রয়োজন হয়ে যায়। অনেকে বাধ্যতামূলক আয়কর দাতা না হয়েও, বিভিন্ন সেবামূলক কাজের জন্য সাময়িকভাবে টিন সার্টিফিকেট Tin certificate তুলতে হয়। আবার সেটি পরবর্তীতে বাতিল করার প্রয়োজন হয়। আজকে আমরা এই লেখাটিতে টিন সার্টিফিকেট কিভাবে বাতিল করবেন সে বিষয়ে আলোচনা করব।
নতুন ট্রেড লাইসেন্সের জন্য আবেদন করার নিয়ম।
নতুন একটি ট্রেড লাইসেন্স আবেদন করার জন্য আপনাকে পাঁচটি ধাপ অনুসরণ করতে হবে।
১. নির্ধারিত আবেদন ফরম পূরণ করা।
২. আবেদনপত্রের সাথে প্রয়োজনীয় সকল সত্যায়িত কাগজপত্র সংযুক্ত করা।
৩. সংযুক্ত সকল কাগজপত্রসহ আবেদন পত্রটি স্থানীয় সরকার অফিসে জমা দান করা।
৪. আবেদনপত্র জমা দেওয়ার পর, স্থানীয় সরকার অফিস থেকে আবেদনপত্র যাচাই করার জন্য, একজন লাইসেন্সিং সুপারভাইজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা সরোজমিনে পরিদর্শনের জন্য যাবেন।
৫. সবকিছু ঠিক থাকলে আবেদনকারী, ধার্যকৃত আবেদন ফি স্থানীয় সরকারের নির্ধারিত ব্যাংকে জমা দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করতে পারবেন। ট্রেড লাইসেন্স এর ফি কত হবে সেটা আপনার ব্যবসার ধরনের ওপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করবে। অর্থাৎ ২৯৪ টি ক্যাটাগরির প্রতিটি আলাদা আলাদাভাবে ফি নির্ধারণ করা আছে। এ ফি ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ২৬,০০০/- টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
ট্রেড লাইসেন্সের জন্য আবেদন ফরম পূরণের নিয়ম।
ট্রেড লাইসেন্স তৈরি করার জন্য স্থানীয় সরকার অফিস যথা- ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, সিটি করপোরেশন থেকে পাওয়া ফরমটি সঠিকভাবে পূরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্ভুলভাবে ফরম পূরণ না করলে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।তাই ট্রেড লাইসেন্স ফরম পূরণ করার নিয়ম, এবং একটি ফরম এ কি কি তথ্য থাকে, তথ্যগুলো কিভাবে নির্ভুলভাবে পূরণ করা যাবে, সে ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
◾ ১নং ঘরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নির্দিষ্ট নাম উল্লেখ করতে হবে।
◾ ২ নং থেকে ৬ নং ঘরে আবেদনকারীর ব্যক্তিগত তথ্য লেখতে হবে। এখানে যথাক্রমে নাম, পিতা/স্বামীর নাম, মাতার নাম, স্থায়ী ঠিকানা, বর্তমান ঠিকানা লিখতে হবে। এখানে উল্লেখ্য যে যদি ব্যবসার মালিকানা একাধিক ব্যক্তির হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে ২ থেকে ৬ নং ঘরে প্রত্যেকেরই তথ্য পাশাপাশি লিখতে হবে।
◾ ৭ নং ঘরে আবেদনকারীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা লিখতে হবে।
◾ ৮ নং ঘরে আবেদনকারীদের জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম্বার লিখতে হবে। এবং ৯ নম্বর ঘরে আবেদনকারীদের জাতীয়তা লিখতে হবে।
◾ ১০ নং ঘরে ব্যবসার ধরন বা ক্যাটাগরি পূরণ করতে হবে। এই অংশটি গ্যাজেটে উল্লিখিত ব্যবসার ধরনের তালিকা থেকে সাবধানতার সাথে পূরণ করতে হবে।
◾ ১১ নং ঘরে ব্যবসা শুরু করার তারিখ উল্লেখ করতে হবে।
◾ ১২ নং ঘরটি শুধুমাত্র লিমিটেড কোম্পানির মালিকদের জন্য। তাই আবেদনকারীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান একটি লিমিটেড কোম্পানি হলে ঐএইঘরে ব্যবসার মূলধন লিখতে হবে
◾ ১৩ নং ঘরে ব্যবসার নামে কোন আয়কর প্রদান করতে হলে তার TIN নাম্বার লিখতে হবে।
◾ ১৪ নাম্বার ঘরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ঠিকানাটি নিজস্ব নাকি ভাড়া তা টিক চিহ্ন দিয়ে পূরণ করতে হবে।
◾ ১৫ নাম্বার ঘরে ব্যবসার আলাদা সাইনবোর্ড আছে কি না তা ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ এর মাধ্যমে লিখতে হবে
◾ ১৬ নাম্বার ঘরে আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা পৌর ভূমি বা সরকারি ভূমির উপর অবস্থিত কিনা তা টিক চিহ্ন দিয়ে প্রকাশ করতে হবে।
◾ ১৭ নং ঘরে আপনার দোকান বা প্রতিষ্ঠান কত তালায় অবস্থিত তা টিক চিহ্ন দিয়ে প্রকাশ করতে হবে।
◾ ১৮ বা শেষ ঘরে আবেদনকারীদের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার লিখতে হবে।
আবেদনকারীর স্বাক্ষর ও নাম লেখা স্থানে আবেদনকারীদের নাম লিখে তার পাশে স্বাক্ষর করতে হবে। এরপর এর নিচে তারিখ লিখতে হবে।
মেয়াদ উত্তীর্ণ ট্রেড লাইসেন্স কিভাবে নবায়ন করতে হয়?
স্থানীয় সরকার অফিস থেকে ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করা হয় এটির মেয়াদ দেওয়া হয় ১ (এক) বছর।
তবে ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করার সময় সেটি চাইলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর পর্যন্ত মেয়াদে নবায়ন করা যায়। একটি ট্রেড লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর সেটি নবায়ন করার জন্য তিন মাস সময় দেওয়া হয়।এই সময়ের মাঝেই ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করে নেওয়া বাধ্যতামূল। কেউ যদি এই সময়ের মধ্যে ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন না করে, পরবর্তীতে সরকারের নিয়ম অনুযায়ী শাস্তির বিধান রয়েছে।
ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করার নিয়ম
ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করার জন্য সাধারণত তিনটি ধাপ অনুসরণ করতে হয।
◾ধাপ-১: ট্রেড লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে পুরাতন ট্রেড লাইসেন্সটি নিয়ে দায়িত্ব প্রাপ্ত আঞ্চলিক কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করতে হবে। তিনিই লাইসেন্সটি নবায়ন করে দিতে পারবেন।
◾ধাপ-২: প্রতিবার লাইসেন্স নবায়ন করার সময় লাইসেন্স নবায়ন ফি প্রদান করতে হবে। লাইসেন্স নবায়ন ফি ও লাইসেন্স তৈরী করার ফি একই। তাই লাইসেন্স নবায়ন করার সময় ক্যাটাগরি অনুযায়ী লাইসেন্সের ফি নির্দিষ্ট ব্যাংকে জমা দিতে হবে।
◾ধাপ-৩: নবায়ন ফি জমা দেওয়ার পর নবায়নকৃত লাইসেন্সটি সংগ্রহ করতে হবে।
সর্বশেষ
আশা করি উপরোক্ত লেখাটি থেকে আপনারা ট্রেড লাইসেন্স তৈরি করন এবং ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করার সম্পর্কে অনেক ধারণা পেয়ে গেছেন। ট্রেড লাইসেন্স সঠিকভাবে তৈরি করতে পারলে ব্যবসা করা অনেক সহজ হয়ে যায় এবং এই লাইসেন্স থাকায় ব্যবসার আইন মেনে চালানো যায়। সে কারণে সকল ব্যবসায়ী ব্যবসা শুরুর পূর্বেই ট্রেড লাইসেন্স তৈরি করে রাখা উচিত।
ট্রেড লাইসেন্স সম্পর্কিত আরো কিছু প্রশ্ন ও উত্তর!
অনলাইন ব্যবসার জন্য কি ট্রেড লাইসেন্স এর প্রয়োজন আছে?
উত্তরঃ শুধুমাত্র ই-কমার্স ব্যবসার জন্য আলাদা করে ট্রেড লাইসেন্স করা বাধ্যতামূলক না। কিন্তু কেউ চাইলে বিভিন্ন সুবিধার জন্য ট্রেড লাইসেন্স করে নিতে পারবে। সেক্ষেত্রে আইটি অথবা সফটওয়্যার ক্যাটাগরিতে ট্রেড লাইসেন্স করতে হবে।
ট্রেড লাইসেন্স তৈরি করার পর যদি কোন তথ্য ভুল হয়ে যায় সেটি সংশোধনের উপায় কি?
উত্তরঃ ট্রেড লাইসেন্সের তথ্য খুব সহজেই নির্দিষ্ট ফি প্রদান করে স্থানীয় অফিসে গিয়ে এফিডেবিটের মাধ্যমে পরিবর্তন করা যায়।
একটি ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে কতগুলো ব্যবসা করা যায়?
উত্তরঃ একটি ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে শুধুমাত্র একটি ব্যবসাই করা যায়। অন্য কোন ব্যবসা করার ক্ষেত্রে ঐ ব্যবসার জন্য আলাদা ট্রেড লাইসেন্স তৈরী করতে হবে।
ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা পরিবর্তন করলে কি ট্রেড লাইসেন্সে কোন সমস্যা হবে?
উত্তরঃ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা পরিবর্তন হলে ট্রেড লাইসেন্সের তথ্যও পরিবর্তন করতে হবে। অন্যথায় ট্রেড লাইসেন্সটির বৈধতা থাকবে না।