অনলাইনে জমির মালিকানা যাচাইঅনলাইনে জমির মালিকানা যাচাই

এখন ঘরে বসেই অনলাইনে জমির মালিকানা যাচাই করতে পারবেন (land ownership check.)। বর্তমান ডিজিটাল যুগে অনেক জটিল কাজগুলো অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে। একটি জমি ক্রয় করার পূর্বে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো জমির মালিকানা, দাগ নাম্বার সবকিছু সঠিক আছে কিনা তা যাচাই করে নেয়া। যদি জমির মালিকানা সঠিক না থাকে তাহলে জমি কিনে আপনি প্রতারণার শিকার হতে পারেন। তাই জমি কেনার পূর্বে প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এখন ঘরে বসেই মাত্র দুই মিনিটে অনলাইনে জমির মালিকানা যাচাই করতে পারেন। কিভাবে ঘরে বসে মাত্র ২ (দুই) মিনিটে অনলাইনে জমির মালিকানা যাচাই করবেন আজ সেই বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। আশা করি এই লেখাটি পড়ে আপনি অনেক উপকৃত হবেন।

জমির মালিকানা যাচাই প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট  ই-পর্চা e-Porcha এর মাধ্যমে নাম দিয়ে জমির মালিকানা যাচাই করার জন্য আপনাকে কিছু ডকুমেন্ট সাবমিট করতে হবে। নাম দিয়ে জমির মালিকানা যাচাই (Land ownership check by name) করার জন্য যে তথ্যগুলো সাবমিট করতে হবে সে তথ্যগুলো হল। 

▶ জমির ঠিকানা: জমির স্থান অনুযায়ী বিভাগের নাম, জেলার নাম, উপজেলার নাম ও মৌজা এ সকল তথ্য সঠিক ভাবে দিতে হবে।

▶ জমির বিবরণে জমির মালিকের সম্পূর্ণ নাম অথবা জমির খতিয়ান নম্বর। 

▶ জমির পর্চার ধরন বা খতিয়ানের ধরন উল্লেখ করতে হবে, যেমনঃ বি এস খতিয়ান, সি এস খতিয়ান, বি আর এস খতিয়ান, আর এস খতিয়ান, এস এ খতিয়ান, ইত্যাদি। 

শুধু নাম দিয়ে জমির মালিকানা যাচাই করার জন্য, সেক্ষেত্রে জমির মালিকের সঠিক নাম জানা থাকা জরুরি। নাম দিয়ে জমির মালিকানা যাচাই এসব ক্ষেত্রে কিছুটা জটিলতা সৃষ্টি হয়। সে ক্ষেত্রে জমির খতিয়ান নাম্বার অথবা জমির দাগ নাম্বার জানা থাকলে খুব সহজেই জমির মালিকানা যাচাই করা সম্ভব।

অনলাইনে জমির মালিকানা যাচাই প্রক্রিয়া।

সাধারণত আমরা দুই ভাবে অনলাইনে জমির মালিকানা যাচাই করতে পারি। ঘরে বসে অনলাইনে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অথবা সরাসরি ভূমি অফিসে গিয়ে, সেখানে দ্বায়িত্বরত কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তবে, বর্তমানে ভূমি অফিসে গিয়ে জমির মালিকানা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়। তাই আপনি কীভাবে অনলাইনে জমির মালিকানা যাচাই করতে পারেন তা নীচে উল্লেখ করা হলো।

মামলা করার সঠিক নিয়ম ও পদ্ধতি। সাধারন ডায়েরি বা জিডি।

অনেকেই নানান ভাবে প্রতারণা, হেনস্থা, নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকেন।  কিন্তু মামলা করার সঠিক নিয়ম ও পদ্ধতি না জানার কারণে কাঙ্খিত বিচার থেকে বঞ্চিত হন। মামলা করার সঠিক নিয়ম ও পদ্ধতিতে জানার জন্য এই লেখাটি পড়ুন।

অনলাইনে জমির মালিকানা যাচাই ওয়েবসাইট

নাম দিয়ে জমির মালিকানা যাচাই করার জন্য প্রথমেই ভূমি মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল এই https://eporcha.gov.bd/  ওয়েবসাইট প্রবেশ করুন। ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পর নিচে ছবির মত এরকম ইন্টারফেস দেখতে পাবেন। এখানে আপনি দুই ভাবে জমির মালিকানা যাচাই করতে পারেন, একটি সার্ভে খতিয়ান আরেকটি নামজারী খতিয়ান এর মাধ্যমে। আপনি যে খতিয়ান অনুযায়ী জমির মালিকানা যাচাই করবেন সেই সেই খতিয়ানটির উপরে ক্লিক করুন।

জমির মালিকানা যাচাই ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট

সার্ভে খতিয়ান অনুযায়ী জমির মালিকানা যাচাই।

ভূমি অফিসের  https://eporcha.gov.bd/ ওয়েবসাইটে সার্ভে খতিয়ানে ক্লিক করার পর নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করে জমির মালিকানা যাচাই করুন। সার্ভে খতিয়ানের মাধ্যমে অনলাইনে জমির মালিকানা যাচাই করার জন্য নিচের পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করুন।  

▶ প্রথম ধাপে জমির স্থান অনুযায়ী জমির বিভাগ নির্বাচন করুন।  

▶ এর পরের ধাপে জমির স্থান অনুযায়ী জেলা নির্বাচন করুন।  

▶ এর পরের ধাপে জমির স্থান অনুযায়ী উপজেলা নির্বাচন করুন।

▶ উপজেলা নির্বাচন করার পর আপনি কোন ধরনের সার্ভে খতিয়ান যাচাই করতে চাচ্ছেন সেটি নির্বাচন করুন। খতিয়ান নির্বাচন করার পরের ধাপে জমির মৌজা দেখা যাবে

▶ এখান থেকে আপনার জমির মৌজা নির্বাচন করুন।

▶ মৌজা নির্বাচন করার পর অটোমেটিকভাবে পরের ধাপে খতিয়ান তালিকা দেখতে পাবেন। 
আপনার খতিয়ান নাম্বার অথবা জমির মালিকের সঠিক নাম তালিকার উপরের সার্চ বক্সে লিখে খুঁজুন বাটনে ক্লিক করুন। খুঁজুন বাটনে ক্লিক করার পর এখানে নাম অনুযায়ী এবং খতিয়ান নাম্বার অনুযায়ী যে খতিয়ান আছে সেটি আপনার সামনে দেখতে পাবেন। 

অনলাইনে জমির মালিকানা যাচাই প্রক্রিয়া

নামজারি খতিয়ান অনুযায়ী জমির মালিকানা যাচাই।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল https://eporcha.gov.bd/  ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পর নামজারি খতিয়ানে ক্লিক করে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করে নামজারি খতিয়ানের থেকে জমির মালিকানা যাচাই করুন। 

▶ প্রথম ধাপে জমির স্থান অনুযায়ী জমির বিভাগ নির্বাচন করুন।  

▶ এর পরের ধাপে জমির স্থান অনুযায়ী জেলা নির্বাচন করুন।  

▶ এর পরের ধাপে জমির স্থান অনুযায়ী উপজেলা নির্বাচন করুন।

▶ এর পরের ধাপে  জমির মৌজা নির্বাচন করুন।

 
▶ মৌজা নির্বাচন করার পর অটোমেটিকভাবে পরের ধাপে খতিয়ান তালিকা দেখতে পাবেন। 
আপনার খতিয়ান নাম্বার অথবা জমির মালিকের সঠিক নাম তালিকার উপরের সার্চ বক্সে লিখে খুঁজুন বাটনে ক্লিক করুন। খুঁজুন বাটনে ক্লিক করার পর এখানে নাম অনুযায়ী এবং খতিয়ান নাম্বার অনুযায়ী যে খতিয়ান আছে সেটি আপনার সামনে দেখতে পাবেন।

নামজারি খতিয়ান অনুযায়ী জমির মালিকানা যাচাই

নাম দিয়ে জমির মালিকানা যাচাই।

নাম দিয়ে জমির মালিকানা যাচাই করার ক্ষেত্রে অনেক সমস্যা দেখা দেয়। এর  কারণ হলো জমির মালিকানা নামের বানানে কোন ভুল আছে। নাম দিয়ে মালিকানা যাচাই এর ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময় এই সমস্যাটি দেখা যায়। এর কারন  হয়তো জমির মালিক/দখলদারের নাম অন্য কোন নামে আছে।

এই ক্ষেত্রে জমির দাগ নং অথবা খতিয়ান নং যদি জানা থাকেতাহলে খুব সহজে জমির মালিকানা যাচাই করতে পারবেন। যদি জমির দাগ নাম্বার খতিয়ান নাম্বার জানা না থাকে শুধু নাম দিয়ে জমির মালিকানা যাচাই করার জন্য নিচের নিয়ম পদ্ধতি অনুসরণ করুন। নাম দিয়ে জমির মালিকানা যাচাই করার জন্য জমির মালিকের সঠিক নাম জানা থাকতে হবে।

নাম দিয়ে জমির মালিকানা যাচাই করার জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল এই https://eporcha.gov.bd/  ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে নামজারি খতিয়ান এই মেনুতে ক্লিক করুন। 

▶ প্রথম ধাপে জমির স্থান অনুযায়ী জমির বিভাগ নির্বাচন করুন।  

▶ এর পরের ধাপে জমির স্থান অনুযায়ী জেলা নির্বাচন করুন।  

▶ এর পরের ধাপে জমির স্থান অনুযায়ী উপজেলা নির্বাচন করুন।

▶ এর পরের ধাপে  জমির মৌজা নির্বাচন করুন। মৌজা নির্বাচন করার পর অটোমেটিকভাবে পরের ধাপে খতিয়ান তালিকা দেখতে পাবেন।

সকল তথ্য দেয়া হয়ে গেলে এবার আপনাকে শেষ ধাপ অর্থাৎ খতিয়ান নং বা জমির মালিকানার নাম দিতে হবে।

যেহেতু আমরা নাম দিয়ে জমির মালিকানা যাচাই করব তাই এইখানে জমির মালিকানার সম্পূর্ণ নাম নির্ভুলভাবে প্রদান করতে হবে। মৌজা নির্বাচন করার পর অটোমেটিকভাবে পরের ধাপে খতিয়ান তালিকা দেখতে পাবেন। আপনার খতিয়ান নাম্বার অথবা জমির মালিকের সঠিক নাম তালিকার উপরের সার্চ বক্সে লিখে খুঁজুন বাটনে ক্লিক করুন। খুঁজুন বাটনে ক্লিক করার পর এখানে নাম অনুযায়ী এবং খতিয়ান নাম্বার অনুযায়ী যে খতিয়ান আছে সেটি আপনার সামনে দেখতে পাবেন।

জমির মালিকানা যাচাই এর প্রয়োজনীয়তা।

আপনার সারা জীবনের অর্জিত অর্থ দিয়ে কোন জমি ক্রয় করতে গিয়ে প্রতারিত হয়ে সমস্ত অর্থ যাতে অসাধু কোন ব্যক্তি হাতিয়ে নিতে না পারে সে জন্য জমি কেনার পূর্বে জমির মালিকানা যাচাই করা নেওয়ার প্রয়োজন। জমি কেনার আগে সমস্ত ডকুমেন্টস জমির মালিকানা ভালোভাবে যাচাই করে তারপরেই জমি কিনতে হবে।  তা না হলে প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। নকল মালিক সেজে, নকল কাগজপত্র তৈরি করে অনেকে আপনার কাছে জমি বিক্রি করে আপনার সাথে প্রতারণা করতে পারে এবং জমির সংক্রান্ত কোনো বিরোধ আছে কিনা সেটাও যাচাই করে নেওয়া প্রয়োজন। জমি কেনার পূর্বে জমির মালিকানা যাচাই করে সঠিক ভাবে জেনে নিতে হবে দলিল অনুযায়ী জমির মালিক সঠিক আছে কিনা জমির পরিমান সঠিক আছে কিনা।

জমির খতিয়ান বের করতে কত টাকা খরচ হয়?

জমির খতিয়ানের অনলাইন কপি বা সার্টিফিকেট কপি বের করতে সরকারি খরচ ১০০ টাকা

জমির খতিয়ান বা পর্চা কি?

পর্চা বা জমি আর খতিয়ান বলতে একটি বিষয় কেই বুঝানো হয়। সাধারণত সরকারিভাবে জমির মালিকানা প্রকাশ করার জন্য যে দলিল করা হয় তাকে জমির খতিয়ান বা পর্চা বলে। এটি এলাকা ভেদে কোথাও পর্চা এবং কোথাও খতিয়ান হিসেবে উল্লেখ করে থাকে।

জমি রেজিস্ট্রেশনের কতদিন পর দলিল পাওয়া যায়?

যায় জমি রেজিস্ট্রেশনের একদিন পরই নকল বা অনুলুপির দলিল নিতে পারবেন।

তথ্যসূত্র

ভূমি মন্ত্রণালয়

প্রগ্রেস বাংলাদেশ

আরো পড়ুন :
ওমরাহ হজ্ব পালন করা একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত আমল। এটি পুরুষ এবং মহিলা উভয়ের জন্যই প্রযোজ্য। ওমরাহ হজ্ব কোন ফরজ এবং ওয়াজিব নয়। হজ্ব যেমন জীবনে একবার ফরজ। তেমনি ওমরাহ হজ্ব  জীবনে একবার সুন্নত। ওমরাহ হজ্ব এর জন্য নির্দিষ্ট কোন দিন এবং সময় নেই। তবে হজের নির্দিষ্ট দিনে ওমরা পালন করা যাবে না। বিশুদ্ধ ও পরিপূর্ণভাবে ওমরা হজ পালন করার নিয়ম বিস্তাতিত >>>

One thought on “<strong>অনলাইনে জমির মালিকানা যাচাই মাত্র ২ মিনিটে।</strong>”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *